নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ ৯ এপ্রিল প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কলমিস্ট এবিএম মূসার ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৪ সালের এই দিনে তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ল্যাবএইড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ক্লাবের আজীবন সদস্য এবিএম মূসা ১৯৩১ সালে তার নানার বাড়ি ফেনী জেলার ধর্মপুর গ্রামে জন্ম নেন।
দীর্ঘ ৬৪ বছর তিনি সংবাদপত্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখে গেছেন। ১৯৫০ সালে দৈনিক ইনসাফে যোগদানের মাধ্যমে তার সাংবাদিকতা জীবন শুরু। ওই বছর তিনি তৎকালীন দৈনিক পাকিস্তান অবজারভারে যোগ দেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের পর কর্তৃপক্ষ পাকিস্তান অবজারভার বন্ধ করে দিলে তিনি দৈনিক সংবাদে যোগ দেন। অবজারভার খুলে দেয়া হলে ১৯৫৪ সালে তিনি সেখানে আবার যোগ দেন।
১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান অবজারভারে রিপোর্টার, স্পোর্টস রিপোর্টার, বার্তা সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় বিবিসি, সানডে টাইমস প্রভৃতি পত্রিকার সংবাদদাতা হিসেবে তিনি রণাঙ্গন থেকে সংবাদ প্রেরণ করতেন। স্বাধীনতার পর তিনি বিটিভির মহাব্যবস্থাপক, মর্নিং নিউজের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হোন। ১৯৭৮ সালে এবিএম মূসা ব্যাংককে অবস্থিত জাতিসংঘের পরিবেশ কার্যক্রমের (এসকাপ) এশিয়া প্যাসেফিক অঞ্চলে আঞ্চলিক পরিচালক পদে যোগ দেন। দেশে ফিরে এসে ১৯৮১ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এবং ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত বংলাদেশ সংবাদ সংস্থার মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান সম্পাদক ছিলেন। ২০০৪ সালে তিনি কিছুদিন দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
এবিএম মূসা জাতীয় প্রেস ক্লাবের চারবার সভাপতি এবং তিনবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি একুশে পদকসহ দেশি-বিদেশি নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
এবিএম মূসা জীবনের শেষ দিনগুলোতে একজন দর্শকপ্রিয় আলোচক এবং সংবাদ বিশ্লেষক হিসেবে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে গেছেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থ ‘মুজিব ভাই’ এবং ‘আমার বেলা যে যায়’। এ ছাড়াও অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সম্পাদনায় এবিএম মূসার স্মারকগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।